Chittagong WikiCamp 2019

বাংলাদেশের প্রথম উইকিক্যাম্প চট্টগ্রামে

বাংলাদেশে প্রথম উইকিক্যাম্প চট্টগ্রামে আয়োজিত হল। ২০১৯ সালে ২০ এপ্রিল ‘উইকিক্যাম্প চট্টগ্রাম ২০১৯’ নামে এই উইকিপিডিয়া কর্মশালা আয়োজিত হয়। এই পরীক্ষামূলক আয়োজনের উদ্দেশ্য পরবর্তীতে এটিকে একটি বার্ষিক জাতীয় উইকি সম্মেলনে রূপ দেয়া, যেখানে দেশের এবং দেশের বাইরের বিভিন্ন ভাষার উইকিপিডিয়ানদের একত্রিত হবার সুযোগ থাকবে।

চট্টগ্রামে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের অফলাইন ক্রিয়াকলাপ বৃদ্ধি, উইকিপিডিয়ানদের মধ্যেকার যোগাযোগ উন্নয়ন, জ্ঞান ভাগাভাগি এবং অভিজ্ঞ ও নবাগত উইকিমিডিয়ানদের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলার পাশাপাশি সর্বোপরি সম্প্রদায় চর্চা সম্প্রসারণে সহায়তা করা এবং বাংলাদেশে উইকিমিডিয়া আন্দোলনকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম উইকিপিডিয়া সম্প্রদায় এই উইকিক্যাম্পের আয়োজন করে। চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের পূর্ব গ্যালারিতে অবস্থিত দ্য গ্যালারি রেস্তোরায় ১০ জন উইকিপিডিয়া স্বেচ্ছাসেবক দিনব্যাপী উইকিক্যাম্পে অংশ নেন। এতে উইকিমিডিয়ানদের মধ্যে সহযোগিতামূলক মনোভাব বৃদ্ধির পাশাপাশি, বাংলাদেশের জাতীয় উদ্যান, বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এবং অন্যান্য সংরক্ষিত স্থানসহ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান ও নিদর্শন সম্পর্কে উইকিপিডিয়ায় ২৮টি নিবন্ধ এবং উইকিউপাত্তে ২৮টি ভুক্তি তৈরি করা হয়।

দক্ষ স্বেচ্ছাসেবকদের একটি দল সমগ্র আয়োজনের বিভিন্ন পর্ব এবং সম্মুখীন প্রযুক্তিগত বাধা অতিক্রম করতে সহায়তা করেছেন। ক্যম্প চলাকালীন কার্যক্রম পরিচালনা এবং কর্মশালা চলাকালীন সম্ভাব্য সমস্যাসমূহ নিয়ন্ত্রণের জন্যে বিভিন্ন কমিটি এবং দল, যেমন অনুষ্ঠান কমিটি, নকশা (ডিজাইন) দল, সহযোগিতা দল গঠন করা হয়।

বাংলাদেশের প্রথম উইকিক্যাম্প চট্টগ্রামে
উইকিক্যাম্পে অংশগ্রহণকারীগণ নিবন্ধ সম্পাদনা করছেন। ছবি: উইকিমিডিয়া বাংলাদেশ / সিসি-বাই-এসএ ৪.০

উইকিক্যাম্পের অধিকাংশ অংশগ্রহণকারী এর আগে উইকিপিডিয়ায় কোনো অবদান রাখেননি এবং উইকিমিডিয়া প্রকল্পগুলির সাথেও পরিচিত ছিলেন না। এটি নবাগত এবং সম্ভাব্য উইকিমিডিয়ানদের প্রশিক্ষণের একটি দারুণ সুযোগ হয়ে উঠেছিল। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩০ শতাংশ ছিলেন নারী অবদানকারী।

আয়োজনে উইকিপিডিয়ায় অবদান সহায়ক প্রযুক্তিগত নির্দেশিকা প্রদান, উইকিউপাত্ত এবং উইকিমিডিয়া কমন্স বিষয়ক কর্শশালা এবং এডিটাথনসহ বিভিন্ন পর্ব ছিল। আয়োজনে যেসকল সম্পাদনা করা হয়েছিল, তার অধিকাংশ নিবন্ধের বিষয়াদি বাংলাদেশে আয়োজিত চলমান উইকি লাভ্‌স আর্থ এবং উইকি লাভ্‌স মনুমেন্টস আলোকচিত্র প্রতিযোগিয়াতার তালিকাভুক্ত বিষয় থেকে চট্টগ্রাম সম্পর্কিত নিবন্ধ নির্বাচন করা হয়েছিল। এডিটাথন চলাকালীন, নবাগত উইকিপিডিয়ানরা শিখেছেন, কীভাবে উইকিপিডিয়ায় বিশেষজ্ঞ না হয়েও সহজে সম্পাদনা করা যায় তার কলাকৌশল।

উইকিক্যাম্পে উইকিউপাত্ত বিষয়ক একটি কর্মশালা ছিল, যেখানে নতুন ২৮টি ভুক্তি তৈরি করার মাধ্যমে অবদানকারীদের কীভাবে ভুক্তি তৈরি করতে হয় তা শেখানো হয়। এবং উইকিউপাত্ত কীভাবে গুগলে তথ্যপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখে সে বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। অয়োজনের আরেকটি অংশে উইকিমিডিয়া কমন্স এবং ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সিং সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করা হয়। পরিপ্রেক্ষিতে অবদানকারীদের কয়েকজন নিবন্ধ লেখার চেয়ে উইকিমিডিয়া কমন্সে অবদান রাখতে অধিক আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

বাংলাদেশের প্রথম উইকিক্যাম্প চট্টগ্রামে
উইকিমিডিয়া শিক্ষা কর্মসূচী বিষয়ক আলোচনা। ছবি: উইকিমিডিয়া বাংলাদেশ / সিসি-বাই-এসএ ৪.০

কর্মশালায় এডিটাথন ছাড়াও, উইকিমিডিয়া শিক্ষা কর্মসূচী এবং এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সংক্ষিপ্তসার তুলে ধরার পাশাপাশি কীভাবে এই প্রকল্পে ছাত্র এবং বিশেষজ্ঞরা একত্র হয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে উইকিমিডিয়ার জ্ঞানমূলক প্রকল্পসমূহের যোগসাজসে সেগুলোর ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেয়া হয়।

নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও উইকিক্যাম্পকে তুলনামূলক সফল কার্যক্রম হিসেবে আয়োজকরা মনে করছেন। তারা আরও জানান, সম্প্রদায়কে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বিদ্যমান সদস্যদের সুযোগ বৃদ্ধি এবং নবাগত স্বেচ্ছাসেবকদের আকৃষ্ট করার জন্য এধরণের নিত্য-নতুন কার্যকর প্রচেষ্টার প্রয়োজন আছে।

ভবিষ্যতে দীর্ঘ সময়ের জন্য এধরনের ক্যাম্পিংয়ে উইকিপিডিয়ানদের একত্রিত হওয়ার পরিকল্পনার কথাও অনুষ্ঠানে আলোচনা হয় এবং অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগই উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের কার্যক্রমে যোগ দিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেন, চলমান উইকিমিডিয়া আন্দোলনে এই ধরনের উৎসাহ টিকে থাকবে। বাংলাদেশে প্রথম উইকিক্যাম্প চট্টগ্রামে উইকিপিডিয়া আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে।


প্রচ্ছদের ছবি: উইকিমিডিয়া বাংলাদেশ/সিসি-বাই-এসএ ৪.০


পূর্বে প্রকাশিত: ২ জুলাই ২০১৯ | উইকিবার্তা : উইকিমিডিয়া বাংলাদেশ সাময়িকী

Loading

Scroll to Top