বো-কাপের নিদর্শন ও কারুশিল্প

বো-কাপের নিদর্শন ও কারুশিল্প দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে বিস্তৃত জায়গা করে নিয়েছে। ১৯৬০-এর দশকে প্রতিষ্ঠিত বো-কাপের প্রাচীনতম গৃহভবনটি ৭১ ওয়াল স্ট্রিটে অবস্থিত। বর্তমানে এটি বো-কাপ জাদুঘর। এখানকার প্রকৃত ইতিহাস আবিষ্কারের জন্য এবং আদর্শ মালে পারিবারিক জীবনের একঝলক ধারণা পেতে জাদুঘরটি অন্যতম ভূমিকা রাখে। এটি প্রাথমিক মুসলিম বসতি স্থাপনকারীদের সাংস্কৃতিক অবদানকে তুলে ধরে, যাদের মধ্যে অনেকেই ছিল দর্জি, কাঠমিস্ত্রি ও জুতা প্রস্তুতকারক।

বো-কাপ জাদুঘর। ছবি: কেনিউম্যান/সিসি-বাই-এসএ ৩.০

জাদুঘরে সংরক্ষিত ঊনিশ শতকের গৃহসজ্জা সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন কেপ ড্রপ-পাতার ডাইনিং টেবিল, কেপ রিজেন্সি-শৈলীর চেয়ার। এছাড়া নববধূর পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে বানানো দাম্পত্য চেম্বার এখানকার গুরত্বপূর্ণ আকর্ষণ। ১৯৬৫ সালে জাদুঘর ভবনটি জাতীয় স্মৃতিসৌধ স্বীকৃতি পায়। ১৯৭০-এর দশকে এটি পুনরুদ্ধার করা হয়। জাদুঘরটি ১৯৭৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার সাংস্কৃতিক ইতিহাস জাদুঘরের উপগ্রহ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

ভবনটির বক্ররেখা-বেষ্টিত বারোক প্রাচীর সংযুক্ত সম্মুখভাগে রয়েছে কেপ-ওলন্দাজ স্থাপত্যশৈলীর উদাহরণ। বাড়ির পেছনে গাছ ও দ্রাক্ষালতা বেষ্টিত খোয়া পাথরের ছোট আঙিনা, যা সংকীর্ণ গলির মাধ্যমে রাস্তার সঙ্গে সংযুক্ত। সপ্তাহের সোম থেকে শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত জাদুঘরটি উন্মুক্ত থাকে। রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ।

খাদ্যরস ও কারুশিল্পের বাজার

বো-কাপের নিদর্শন ও কারুশিল্প
কেপ মালয় খাবার। ছবি: দ্য কমন ওয়ান্ডার

উঁচু ওয়াল স্ট্রিটের সাৎশক্লিফে সিভিক সেন্টারে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী খাবার ও মন জুড়ানো হস্তশিল্পের বাজার। নকশাকার পোশাক থেকে শুরু করে হস্তনির্মিত গহনা, উটপাখির চামড়ার হাতব্যাগ, জুতা, ব্রোঞ্জের মূর্তিসহ বিস্তৃত দেশীয় হস্তশিল্পের সরবরাহ মেলে এখানে। ঐতিহ্যবাহী খাদ্যরস হিসেবে পাওয়া যায় কেক, সামোসা, কুইস্টার এবং ঘরে তৈরি জ্যামের সঙ্গে কফি।

কেপ মালয় রন্ধনশৈলী

কোনও সংস্কৃতি এবং মানুষকে ভালোভাবে জানার অন্যতম উপায় তাদের খাবারের নমুনা। সর্বাধিক খাঁটি কেপ মালয় খাবার এবং আতিথেয়তার জন্য বো-কাপে রয়েছে বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী কেপ মালয় রেস্তোঁরা। উল্লেখযোগ্যভাবে হালাল ও অ্যালকোহল মুক্ত খাবার পরিবেশন করা হয় এখানে। ফল, মসলা, সবজি ও মাংস মিশ্রিত কেপ মালয় খাবারের খ্যাতি দুনিয়াজোড়া। কেপ মালয় খাবার মূলত ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার রন্ধনশৈলীর মিশ্রণ। এখানকার ঐতিহ্যবাহী মেন্যুর মধ্যে রয়েছে সামোসা, ব্রিডিজ, কারি ও বোবোটি। এছাড়া দেখা যায় প্রাচ্য থেকে আমদানিকৃত হলুদ, জাফরান, মরিচ ও মসলার সমাহার।

আনুষঙ্গিক তথ্য: কেপ টাউন আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রায় সাড়ে ২১ কিলোমিটার দূরবর্তী বো-কাপে বাস, ট্যাক্সি বা রাইড শেয়ারিং যোগে যাওয়া যায়। এজন্য লাগে সর্বোচ্চ আধা ঘণ্টা। রাতযাপনের জন্য এখানে আছে তিন, চার ও পাঁচতারকা মানের আবাসন ব্যবস্থা, বো-কাপের নিদর্শন ও কারুশিল্প, এবং অবশ্যই কেপ মালয় খাবার।

Loading

Scroll to Top